Recents in Bollywood Movies

Breaking

Tuesday, September 3, 2024

জিম্মিদের মৃত্যু ঠেকাতে না পারায় জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন নেতানিয়াহু

জিম্মিদের মৃত্যু ঠেকাতে না পারায় জাতির

 কাছে ক্ষমা চেয়েছেন নেতানিয়াহু


শনিবার গাজায় থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মধ্যে ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে না পারায়, জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।


ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস হুশিয়ারি দিয়েছে, যুদ্ধবিরতি না হলে আরও জিম্মিদের একই পরিণতি বরণ করতে হবে, 'কফিনে ফিরতে হবে পরিবার-পরিজনের কাছে'।


জিম্মিদের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল এখন ইসরায়েল। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে স্লোগান দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে।


জিম্মিদের মৃত্যু ঠেকাতে না পারায় জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন নেতানিয়াহু


অন্যদিকে, ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা ধর্মঘটে বন্ধ হয়ে গেছে দেশটির কল-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।


এমন পরিস্থিতিতে জিম্মিদের মৃত্যুর ঠেকানোর ব্যর্থতা স্বীকার করে নিজ জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মি. নেতানিয়াহু।


জিম্মি সংকটকে ঘিরে দেশের অভ্যন্তরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবেও ইসরায়েল সরকারের ওপর ক্রমশ চাপ বাড়তে দেখা যাচ্ছে।


এদিকে, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের ঝুঁকি উল্লেখ করে ইতোমধ্যেই দেশটির কাছে বেশ কিছু অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্য।


অন্যদিকে, হামাসের হাতে বন্দি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যথেষ্ট উদ্যোগ নেননি বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।


গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য বেশ আগে থেকেই মি. নেতানিয়াহুর ওপর চাপ দিয়ে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।


জিম্মিদের মৃত্যু ঠেকাতে না পারায় জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন নেতানিয়াহু


এ লক্ষ্যে সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইসরায়েল সফরেও গিয়েছিলেন। কিন্তু এত কিছুর পরও গাজায় যুদ্ধ থামায়নি ইসরায়েল।


এর মধ্যেই গত শনিবার গাজার রাফাহ এলাকায় হামাসের একটি সুড়ঙ্গ থেকে ছয় জিম্মির মরদেহ খুঁজে পায় ইসরায়েলি সৈন্যরা।


নিহত ছয় জিম্মিদের মধ্যে একজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বলে জানা গেছে। বাকি পাঁচজন ইসরায়েলের নাগরিক।


গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের আড়াইশোর বেশি নাগরিককে অপহরণ করে নিয়ে যায় হামাস।


ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ঘোষণা না করলে অন্য জিম্মিরাও 'কফিনে করে' ফিরবেন বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।


"চুক্তি স্বাক্ষর না করে শক্তি খাটিয়ে জিম্মিদের মুক্ত করতে নেতানিয়াহুর চাপ দেওয়ার পরিণতি হলো, জিম্মিরা কফিনে করে পরিবারের কাছে ফিরবেন," সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবায়দা।


জিম্মিদের মৃত্যু ঠেকাতে না পারায় জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন নেতানিয়াহু


বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে


শনিবার ছয় জিম্মির মৃত্যুর খবর জানাজানি হওয়ার পর ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, সেটি এখন দেশটির অন্য শহরেও ছড়িয়ে পড়েছে।


পতাকা হাতে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় বিক্ষোভ করছেন।


জিম্মি ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, তাদের স্বজনদের মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য জরুরিভিত্তিতে হামাসের সঙ্গে আলোচনা এবং চুক্তি করা দরকার।


ছবির ক্যাপশান,তেল আবিবে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, সেটি এখন ইসরায়েলের অন্য শহরগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে

কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার সেটি না করায় জিম্মিদের এখন অকারণে প্রাণ দিতে হচ্ছে।


এক বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে জিম্মি ব্যক্তিদের পরিবারগুলো বলেছে, নানান অজুহাতে হামাসের সঙ্গে চুক্তিতে বিলম্ব করার কারণেই নতুন করে আরও ছয় জিম্মির মৃত্যু হয়েছে।


"প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সদিচ্ছা দেখালে আমাদের স্বজনরা এখনো বেঁচে থাকতেন," বলেছে পরিবারগুলো।


মূলত সে কারণেই রাজধানী তেল আভিভের রাস্তায় নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে জিম্মিদের মুক্তির জন্য অবিলম্বে হামাসের সঙ্গে চুক্তির দাবি জানাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।


তবে হামাসের শর্ত মেনে যুদ্ধবিরতির চুক্তি করতে নারাজ দেশটির প্রধানমন্ত্রী মি. নেতানিয়াহু।


উল্লেখ্য যে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করে জিম্মি ইসরায়েলিদের ফিরিয়ে নিতে ফিলাডেলফি সীমান্ত থেকে ইসরাইলি সেনাদের সরিয়ে নিওয়ার শর্ত দিয়েছে হামাস।


মিশর সীমান্ত ঘেঁষা 'ফিলাডেলফি করিডোর' একটি বাফার জোন বা নিরাপদ অঞ্চল, যা প্রায় একশো মিটার প্রশস্ত।


সৈন্য অপসারণ করলে হামাস আবারও গুরুত্বপূর্ণ এই সীমান্ত ব্যবহার করে অস্ত্র আমদানি শুরু করতে পারে, এমন আশঙ্কা জানিয়ে হামাসের শর্ত মানতে রাজি হচ্ছেনা নেতানিয়াহু প্রশাসন।


সম্প্রতি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা প্রধান রোনেন বার মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে একটা চিঠি লিখে তাদের সতর্ক করেছিলেন।


সেই চিঠিতে মি. বার উল্লেখ করেছিলেন পশ্চিম তীরের ইহুদি চরমপন্থীরা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে 'সন্ত্রাসী' কাজ চালাচ্ছে এবং দেশের 'অবর্ণনীয় ক্ষতি' করছে।


এদিকে, গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই অধিকৃত পশ্চিম তীরে দ্রুত বসতি স্থাপন হচ্ছে।


ইসরায়েল সরকারের থাকা চরমপন্থীরা অবশ্য 'গর্ব' করে বলেন এ পরিবর্তন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে বাধা দেবে।


আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিজেদের 'লক্ষ্য' পূরণের জন্য গাজায় যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চাইছে এই চরমপন্থীরা।


বসতি স্থাপনের বিষয়ে পর্যবেক্ষণকারী ইসরায়েলি সংস্থা 'পিস নাও'- এর ইয়োনাতান মিজরাহি বলেছেন, "ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের চরমপন্থী ইহুদিরা ইতিমধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের অবসান ঘটানোর বিষয়টাকেও কঠিন করেছে।"


তার মতে সাতই অক্টোবরের হামলা পর ইসরায়েলি সমাজে 'ক্রোধ ও ভয়ের মিশ্রণ' রয়েছে।


পিউ রিসার্চ সেন্টারের জুন মাসের একটা সমীক্ষা বলছে, ৪০ শতাংশ ইসরায়েলি বিশ্বাস করেন যে এই বসতি স্থাপন তাদের দেশকে নিরাপদ করেছে।


এর আগে ২০১৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৭ শতাংশ।


অন্যদিকে, জুন মাসের ওই জরিপে অংশ নেওয়া ৩৫ শতাংশ মানুষ আবার মনে করেন, বসতি স্থাপনের কারণে ইসরায়েলের নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগের জরিপে ওই পরিসংখ্যান ছিল ৪২ শতাংশ।

No comments:

Post a Comment